-->

কেন গুগল Blogspot Blogger দিয়ে ব্লগ তৈরি করবেন?

ব্যক্তিগত কিংবা ব্যবসায়িক কাজের জন্য গুগল Blogspot Blogger দিয়ে ব্লগ তৈরি করবেন নাকি WordPress দিয়ে ব্লগ তৈরি করবেন সেই বিষয়ে আমরা ইতোপূর্বে আমাদের ব্লগে বিস্তারিত দুটি পোস্ট শেয়ার করেছি। আমি নতুন করে এ দুটি বিষয় নিয়ে আবারো আলোচনা করতে চাইছি না। আপনি যদি ব্লগিংয়ে নতুন হয়ে থাকেন বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারনা সম্পন্ন না হন, তাহলে কেন আপনার জন্য গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগ তৈরি করে ব্লগিং শুরু করা উচিত সেই বিষয়ে আলোচনা করব। পাশাপাশি অন্যান্য প্লাটফর্মের তুলনায় গুগল ব্লগার ব্লগে তুলনামূলক কি কি সুবিধা রয়েছে সেই বিষয়েও আলোচনা করব।
কেন গুগল Blogspot Blogger দিয়ে ব্লগ তৈরি করবেন?

আজকের এই পোস্টটি পড়ার বা দেখার সাথে সাথে অনেকে বলবেন যে, ইন্টারনেট বিশ্বে মোট ব্লগের প্রায় ৬০% হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা। পক্ষান্তরে মাত্র ১৫% - ১৮% ব্লগ হচ্ছে গুগল ব্লগস্পট ব্লগার দিয়ে তৈরি। এ ক্ষেত্রে আপনি কেন শুধু শুধু গুগল ব্লগার এর সাফাই গেয়ে যাচ্ছেন? আমি কোন দিন ওয়ার্ডপ্রেসকে খারাপ বলিনি এবং আজও বলছি না। কারণ ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে অত্যান্ত ভালোমানের ব্লগিং প্লাটফর্ম যাকে খারাপ বলার কোন সুযোগ নেই। তবে আপনার জন্য কোন প্লাটফর্ম ভালো এবং কেন গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগিং শুরু করবেন সেই বিষয়ে মোটামোটি স্পষ্ট ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব।

কেন গুগল Blogger দিয়ে ব্লগ তৈরি করবেন?

আপনারা নিশ্চয় জানেন যে, ব্লগার হচ্ছে গুগল এর একটি নিজস্ব ব্লগিং সার্ভিস। কোন ধারনের কোডিং নলেজ ছাড়া খুব সহজে জিমেইল আইডি ব্যবহার করে একটি ব্লগ তৈরি করা যায়। বিশেষকরে এটি গুগল এর প্রোডাক্ট হওয়ার কারনে পরিপূর্ণ আস্থা রেখে ব্লগিং চালিয়ে যাওয়া যায়। ব্লগিং শুরুর দিকে কেন গুগল Blogspot Blogger দিয়ে ব্লগ তৈরি করা উচিত সেই বিষয়ে আমি নিচে পয়েন্ট আকারে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

১। গুগল এর প্রোডাক্টঃ

অনলাইন ভিত্তিক অনেক ধরনের গুগল প্রোডাক্ট রয়েছে যেগুলো ইচ্ছে করলেও সকল দেশ থেকে ব্যবহার করা যায় না। অর্থাৎ গুগল তাদের সব ধরনের প্রোডাক্ট সকল দেশের জন্য কখনোই উন্মুক্ত করে না। এমনকি গুগলের অনেক প্রোডাক্ট রয়েছে যেগুলো টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে কেনার সুযোগ থাকে না। গুগল ব্লগার হচ্ছে এমন একটি প্রোডাক্ট যেটি গুগল সকল দেশের জন্য উন্মুক্ত রেখেছে। গুগল ব্লগার সরাসরি গুগল এর সার্ভার এর সাথে সংযুক্ত থাকায় সার্ভিস জনিত কোন ত্রুটি নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।

২। হোস্টিং ফ্রিঃ

গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগ তৈরি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন ধরনের মাসিক কিংবা বাৎসরি চার্জ পরিশোধ করতে হয় না। কোন প্রকার টাকা পয়সা খরছ না করে HTML, CSS ও JavaScript সহ সকল ধরনের ফাইল আপলোড করে ব্লগ ডিজাইন করতে পারবেন। আমার মনেহয় গুগল ব্লগার সার্ভিসটি ফ্রি না হয়ে পেইড হলে এর ব্যবহারকারী অারো অধিক হত। ‍গুগল এটিকে সম্পূর্ণ ফ্রি দিচ্ছে বলে অনেকে গুরুত্বসহকারে নিচ্ছে না!!

৩। টপ ডোমেইন সেট করার সুযোগঃ

টপ লেভেলের ডোমেইন সহ যে কোন ধরনের ডোমেইন সেট করা যায় বলে গুগল ব্লগার আমার খুব পছন্দের একটি ব্লগিং প্লাটফর্ম। কোন ধরনের হোস্টিং খরছ ছাড়া শুধুমাত্র ৫/৬ শত টাকার বিনিময়ে একটি টপ লেভেলের ডোমেইন কিনে খুব সহজে ব্লগে সেট করা যায়। তাছাড়া গুগল সম্প্রতি টপ লেভেলের ডোমেইন প্রোভাইড করছে বিধায় খুব সহজে অল্প খরছে গুগল এর নিকট থেকে একটি ডোমেইন কিনে ব্লগে সেট করা যায়। তাছাড়া আপনি যদি চান, কোন ধরনের টাকা পয়সা খরছ না করেই ব্লগিং চালিয়ে যাবেন, তাহলেও Blogspot ডোমেইন দিয়ে ব্লগিং চালিয়ে যেতে পারবেন।

৪। এসইও সাপোর্টঃ

বর্তমান সময়ে সবাই গুগল সার্চ ইঞ্জিন হতে ট্রাফিক পাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত গুগল সার্চ ইঞ্জি অপটিমাইজেশনের বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। কারণ সবাই জানে যে, গুগল সার্চ ইঞ্জিন হতে ট্রাফিক সংগ্রহ করতে পারলে ব্লগের সাফল্য কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না। ব্লগার যেহেতু গুগল এর একটি নিজস্ব সার্ভিস সেহেতু ব্লগার টিম একটিকে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের উপযোগি করে তৈরি করেছে। তাছাড়া আপনারা জানেন যে, ব্লগার ড্যাশবোর্ড এর ভীতরের ব্লগার থিমস ও পোস্ট অপটিমাইজেশন করার সকল অপশন রয়েছে। আপনি শুধুমাত্র সেটিগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলেই গুগল আপনার ব্লগটিকে অবশ্যই প্রাধান্য দেবে। আমি ১০০% গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি যে, গুগল ব্লগার দিয়ে তৈরি ব্লগে ভালোমানের কনটেন্ট থাকলে সেটি সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় আসবেই আসবে।

৫। থিমস সহজ কাষ্টমাইজেশনঃ

আপনারা নিশ্চয় জানেন যে, ব্লগার থিমস ডিজাইন ও পরিবর্তনের জন্য খুব বেশী কাষ্টমাইজেশন করতে হয় না। কাষ্টমাইজেশন করার প্রয়োজন হলেও কোন ধরনের কোডিং জ্ঞান এর প্রয়োজন হয় না। ব্লগার থিমস এর ভীতরে Variable কোড সংযুক্ত থাকায় কোন ধরনের কোডিং দক্ষতা ছাড়াই ব্লগের প্রয়োজনীয় ডিজাইন পরিবর্তন করা যায়। তাছাড়া ব্লগার টিম সম্প্রতি অনেক ভালোমানের আকর্ষণীয় থিমস যুক্ত করেছে বিধায় পছন্দমত যে কোন থিমস ব্যবহার করে ডিজাইনের চাহিদা মিটাতে পারবেন।

৬। ইউজার ফ্রেন্ডলিঃ

ব্লগার ব্লগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এটি পরিপূর্ণ ইউজার ফ্রেন্ডলি। গুগল ডেভেলপার টিম কর্তৃক এটি পরিচালিত হওয়ার কারনে তারা এটিকে অত্যান্ত সহজ ও ইউজার ফ্রেন্ডলি করে তৈরি করেছে। তাছাড়া নতুন থিমস গুলো Responsive Design এর হওয়াতে সকল ধরনের ছোট বড় ডিভাইসে খুব সুন্দরভাবে লোড নেয়। যার ফলে সকল ধরনের মোবাইল ও ট্যাবলেট থেকে সহজ কনটেন্ট দেখা ও পড়া সম্ভব হয়।

৭। ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগে মাইগ্রেটঃ

আপনি যে কোন সময় আপনার ব্লগকে গুগল ব্লগার হতে ওয়ার্ডপ্রেস এ মাইগ্রেট করতে পারবেন। আপনার ব্লগটাকে প্রফেশনাল পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাইলে হোস্টিং কিনে যে কোন সময় ব্লগের পোষ্টগুলো ওয়োর্ডপ্রেস এ পরিবর্তন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেসে পরিবর্তনের জন্য ব্লগার টিমের কোন অনুমতি প্রয়োজন হবে না কিংবা বাধার সম্মুখিন হতে হবে না। আপনার ইচ্ছামত যেকোন সময়ে ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগে মাইগ্রেট করতে পারবেন।

৮। বিবিধ বিষয়ঃ

যেহেতুন গুগল ব্লগার গুগল এর নিজের সার্ভারে হোস্টিং করা এবং নিজেদের ডেভেলপার দ্বারা পরিচালিত সেহেতু এর সুবিধাগুলো বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। আমি আরো কয়েকটি সুবিধা নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরছি।
  • এ্যাডসেন্স থেকে আয় করা যায়।
  • এ্যাফিয়েলেট মার্কেটিং করে আয় করা যায়।
  • আয়ের কোন অংশ গুগলকে দিতে হয় না (পুরোটা আপনার নিজের)।
  • ব্লগ হ্যাকিং হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
  • ব্লগের স্পিড অনেক বেশী।
  • বিভিন্ন ধররে ফ্রি ইউজেট।
  • সহজে র‌্যাংক করানো।
  • গুগল এটিচিউট।
সর্বশেষঃ উপরোক্ত আলোচনা ও বিশ্লেষণ থেকে আপনি নিজেই বুঝতে পারছেন আপনার জন্য কোন প্লাটফর্ম উপযুক্ত। আপনি ক্ষুদ্র পরিষরে ব্লগিং করতে চাইলে আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগ তৈরির জন্য পরামর্শ দেব। পরবর্তীতে আপনার ব্লগ জনপ্রিয়তা অর্জন করলে এবং আপনি নিজেও অভীজ্ঞতা সম্পন্ন হতে পারলে ব্লগার থেকে ওয়ার্ডপ্রেসে পরিবর্তন করে নিবেন।

পোস্ট রেটিং করুন

আরও নতুন পোস্ট পুরানো পোস্ট

সম্পর্কিত পোস্টসমূহ

    লাইক এবং ম্যাসেজ করুন
    ×
    _

    নিচে থেকে আমাদের পেজ লাইক করুন সঙ্গে চাইলে আমাদের ম্যাসেজ ও করতে পারেন।

    Get the latest article updates from this site via email for free!